প্রবৃত্তি ধ্বংসাত্মক বিষয় সমূহের একটিঃ পর্০১

মানুষের সবচেয়ে বড় দুশমন হল শয়তান, যে মানুষকে খারাপ পথের দিকে ডাকে। আর মানুষের সবচেয়ে বড় বন্ধু হল, তার জ্ঞান যা তাকে ভালো উপদেশ দেয়। আর মানুষের অপর বন্ধু হল, ফেরেশতা যে তাকে ভালো কাজের দিকে উদ্বুদ্ধ করে। যখন কোন ব্যক্তি তার প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তখন সে তার আত্মাকে নিজ হাতে দুশমনের কাছে সোপর্দ করে এবং নিজেকে শয়তানের বেড়াজালে আবদ্ধ করে। যখন কোন ব্যক্তি শয়তানের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়, তখন তার পরিণতি হয় খুবই করুণ। আর একেই বলা হয়, মহা বিপদ ও করুণ পরিণতি, যার থেকে রাসূল সা. আল্লাহর দরবারে মুক্তি কামনা করেন। এছাড়া একে খারাপ ফায়সালা ও দুশমনদের খুশি করাও বলা হয়ে থাকে। এ দুটি থেকেও রাসূল সা. আল্লাহর দরবারে মুক্তি চান।
আগেকার যুগে বলা হত, যখন তোমার উপর তোমার জ্ঞান প্রাধান্য বিস্তার করে, তখন তা তোমার উপকারে লাগে। আর যখন তোমার উপর তোমার প্রবৃত্তি প্রাধান্য বিস্তার করবে, তখন তা তোমার দুশমনের কাজে লাগবে।
🔸
প্রবৃত্তির অনুসরণ দ্বীনের মধ্যে বিকৃতির কারণ:
যারা প্রবৃত্তির অনুসরণ করে তারা দ্বীনের মধ্যে বিকৃতি করতে কোন প্রকার কুন্ঠাবোধ করে না। তারা দ্বীনকে তাদের প্রবৃত্তির চাহিদা অনুযায়ী সাজায়। তাদের কাছে যদি সঠিক দ্বীন কোনটি তা তুলে ধরা হয়, তখন তারা প্রবৃত্তিকেই প্রাধান্য দেয়, দ্বীনকে তারা প্রাধান্য দেয় না।
হাম্মাদ ইব্ন আবি সালমা রাদিআল্লাহু আনহু বলেন, রাফেজীদের একজন শাইখ তাব, আমাকে হাদিস বর্ণনা করে বলেন, আমরা যখন কোন বিষয়ে একমত হতাম এবং বিষয়টিকে সুন্দর মনে করতাম, তখন তাকে হাদিস বলে চালিয়ে দিতাম। হাদিস আমাদের নিকট রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী হতে হবে এমন কোন শর্ত ছিল না।
প্রবৃত্তির অনুসারিরাই যুগে যুগে দ্বীনের মধ্যে বিকৃতি সাধন করে। বিদআত সৃষ্টি তারাই করেছে, যারা প্রবৃত্তির অনুসরণ করেছে।
🔸
প্রবৃত্তির অনুসরণ বান্দার উপর তাওফিকের দরজাসমূহ বন্দ করে দেয়া হবে:
[যখন কোন বান্দা প্রবৃত্তির অনুসরণ করতে থাকে, তখন তাকে ভালো কাজের তাওফীক দেয়া হয় না। সে সব সময় খারাপ, অন্যায়, অশ্লীল ও অপকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকে। ভালো কাজ করা তার জন্য কঠিন হয়ে যায়। ভালো কোন কাজের কথা বললে বা ভালো কাজের উপদেশ দিলে তা তার নিকট অসহ্য লাগে। সে সব সময় পাগলা হাতির মত ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করে।]
ফুজাইল ইব্ন আয়ায রহ. বলেন, যার উপর প্রবৃত্তির অনুসরণ ও মানবিক চাহিদা প্রাধান্য বিস্তার করে, তার থেকে তাওফিক লাভের সব পথ ও উপকরণ দূর হয়ে যায়।
প্রবৃত্তির অনুসারীরা চলার পথে তাদের রাস্তা ভুলে যায় এবং বিভ্রান্ত হয়; তাকে সঠিক ও সরল পথ লাভের তাওফিক দেওয়া হয় না। কারণ, সে হেদায়েত ও তাওফিক লাভের উৎস হতে বিমুখ। সে কুরআন ও সুন্নাহকে বাদ দিয়ে তার প্রবৃত্তিকে গ্রহণ করছে। কুরআন ও সুন্নাহর অনুসরণ বাদ দিয়ে সে প্রবৃত্তির অনুসারী হল। সুতরাং, তাকে কীভাবে সঠিক পথের প্রতি তাওফিক দেয়া হবে!
আল্লাহ রাব্বূল আলামীন বলেন,
﴿أَفَرَءَيۡتَ مَنِ ٱتَّخَذَ إِلَٰهَهُۥ هَوَىٰهُ وَأَضَلَّهُ ٱللَّهُ عَلَىٰ عِلۡمٖ وَخَتَمَ عَلَىٰ سَمۡعِهِۦ وَقَلۡبِهِۦ وَجَعَلَ عَلَىٰ بَصَرِهِۦ غِشَٰوَةٗ فَمَن يَهۡدِيهِ مِنۢ بَعۡدِ ٱللَّهِۚ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ ٢٣﴾ [ سورة الجاثية 23 [.
“তবে তুমি কি তাকে লক্ষ্য করেছ, যে তার প্রবৃত্তিকে আপন ইলাহ বানিয়ে নিয়েছে? তার কাছে জ্ঞান আসার পর আল্লাহ তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন এবং তিনি তার কান ও অন্তরে মোহর মেরে দিয়েছেন। আর তার চোখের উপর স্থাপন করেছেন আবরণ। অতএব আল্লাহর পর কে তাকে হিদায়াত করবে? তারপরও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না?”। [সূরা জাসিয়া , আয়াত: ২৩]
আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি তার পার্থিব জীবনে প্রবৃত্তিকে উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করল এবং তার অনুসরণ করল, আল্লাহ তা’আলা তার চোখ, কান ও অন্তরে মোহর মেরে দেবে। সে আর সত্য কথা শুনতে পারবে না, সত্যকে প্রত্যক্ষ করত পারবে না আর অন্তরে সত্যকে অনুধাবন করতে পারবে না।
মানুষ যখন তার প্রবৃত্তির পুজা করে, তখন সে জ্ঞান-বুদ্ধি হারা হয়। তার জ্ঞান-বুদ্ধি লোপ পেতে থাকে।
মুতাছিম বিল্লাহ একসময় আবি ইসহাক আল মুসিলিকে বলেছিলেন, হে আবু ইসহাক যখন কোন ব্যক্তি তার প্রবৃত্তিকে সহযোগিতা করে, তখন তার চিন্তা, ফিকির ও বুদ্ধি লোপ পায়।
প্রবৃত্তিকে সহযোগীতা করার অর্থ হল প্রবৃত্তির চাহিদা অনুযায়ী চলা। মন যা চায় তা করা এবং মনে বিরোধিাত না করা। আর মানুষ যখন তার মনে যা চায় তা করে তখন তার জ্ঞান বুদ্ধি লোপ পাবে এবং ধীরে ধীরে সে জ্ঞান শূন্য হবে।
🔸
প্রবৃত্তির অনুসরণ গুনাহ, অন্যায় ও অপরাধের কারণ:
প্রবৃত্তির অনুসরণ করা অপমান অপদস্থ হওয়ার কারণ হয়ে থাকে। যারা প্রবৃত্তির অনুসরণ করে তাদের পদে পদে লাঞ্চিত হতে হয়। এ ছাড়াও প্রবৃত্তির অনুসারীরা বিভিন্ন ধরনের ব্যধিতে আক্রান্ত হয়। যেমন- যারা প্রবৃত্তির অনুকরণ করে তাদের অন্তর কঠিন হয়ে যায়। আর যখন গুনাহ ও অপরাধের কারণে অন্তর কঠিন হয়, তখন সে কোন অপরাধকে অপরাধ মনে করে না। যে কোন ধরনের গুনাহ, অন্যায় ও অপরাধ সে করতে পারে। কোন অন্যায়কে সে অন্যায় মনে করে না। কোন অপরাধকে সে বড় মনে করে না। তার নিকট সব ধরনের গুণাহ হালকা মনে হয়। আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« إِنَّ المُؤْمِنَ يَرَى ذُنُوبَهُ كَأَنَّهُ قَاعِدٌ تَحْتَ جَبَلٍ يَخَافُ أَنْ يَقَعَ عَلَيْهِ، وَإِنَّ الفَاجِرَ يَرَى ذُنُوبَهُ كَذُبَابٍ مَرَّ عَلَى أَنْفِهِ فَقَالَ بِهِ هَكَذَا »
“একজন মুমিন তার গুণাহকে অনেক বড় করে দেখে। মনে হয় সে একটি বিশাল পাহাড়ের নিচে বসা, আশঙ্কা করছে যে পাহাড়টি তার মাথার উপর ভেঙ্গে পড়বে। আর গুণাহগার ব্যক্তি সে তার গুণাহকে একটি মাছির মত মনে করে। অর্থাৎ, মাছিটি তার নাকের উপর বসল, আর ঝাড়া দেয়ার সাথে সাথে চলে গেল”
🔸
প্রবৃত্তির অনুসরণ স্বাভাবিক জীবন-যাপন ব্যাহত করা ও মানুষের রোষানলে পড়ার কারণ:
একটি কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে, প্রবৃত্তির অনুসরণের কারণেই মানুষের মধ্যে হিংসা, বিদ্বেষ, অন্যায়, অনাচার ও দুশমনি সৃষ্টি হয়। প্ক্ষান্তরে যে ব্যক্তি তার প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে বিরত থাকে এবং তার বিরোধিতা করে, সে তার দেহ, মন ও যাবতীয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে শান্তি দেয়। তাকে এদিক সেদিক ছুটাছুটি করতে হয় না। আর যে ব্যক্তি তার প্রবৃত্তির অনুসরণ করল, সে যেন একটি দুর্বিষহ জীবন যাপন করল। সে কোথাও কোন প্রকার শান্তি পায় না। সব সময় দুশ্চিন্তা ও হতাশায় লিপ্ত থাকে। তার পেরেশানির কোন অন্ত থাকে না। সে মানুষকে খারাপ জানবে আর মানুষ তাকে খারাপ জানবে। তার জীবনে বিপর্যয় ছাড়া কিছুই জুটবে না। তার চাহিদার শেষ নাই। যাদের চাহিদা যত বেশি হবে, সে ততবেশি অশান্তি ভোগ করবে।
ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিআল্লাহু আনহু বলেন, তোমরা তোমাদের নফসকে তার চাহিদা থেকে ফিরিয়ে রাখ। কারণ, নফস হল এমন একটি চালক, যে তোমাকে অতীব এমন খারাপ পরিণতির দিকে নিয়ে যাবে, যার থেকে মুক্তি পাওয়ার মত কোন উপায় তোমার থাকবে না। মনে রাখবে সত্য খুব ভারি ও কঠিন, সত্যের দায়িত্ব মহান। যারা সত্যের দিশারী হয়, তাদের অবশ্যই গুরু দায়িত্ব পালন করতে হয়। আর বাতিল খুব সহনীয় ও সহজলভ্য। এর জন্য খুব কষ্ট করতে হয় না। দুনিয়ার শ্রোতের সাথে গা বাসিয়ে দিলেই চলে। বর্তমান যুগটাই হল, খারাপের যুগ। এ যুগে গুনাহ, অন্যায়, অনাচারকে সহজ করে দেয়া হয়েছে। শয়তান মানুষের জন্য অপরাধকে সুশোভিত করে দিয়েছে এবং গুনাহের যাবতীয় উপকরণ মানুষের দোরগড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। আর গুনাহের কাজ ছেড়ে দেয়া, তাওবার মাধ্যমে প্রতিকার করা হতে উত্তম। অনেকে মনে করে আমরা এখন গুনাহ করব, তারপর তাওবা করে আল্লাহর নিকট ক্ষমা চেয়ে নিব। তাদের এ ধরনের ধারণা ভ্রান্ত ও বাতিল। আর অনেক দৃষ্টি আছে মানুষের অন্তরে প্রেমের বীজ বপন করে। সুতরাং, খারাপ বস্তু থেকে দৃষ্টিকে ফিরিয়ে রাখতে হবে। কারণ, দৃষ্টিকে শয়তানের তীর বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তীর দিয়ে যেমন শিকার করা হয়, অনুরুপভাবে দৃষ্টির মাধ্যমে মানুষ অন্যায় অপকর্ম শিকার করে। আর সামান্য সময়ের জন্য প্রবৃত্তিতে লিপ্ত হওয়া তোমার মধ্যে দীর্ঘকালের জন্য পেরেশানি ও দুশ্চিন্তা সৃষ্টি করবে। অর্থাৎ, তুমি হয়ত অল্প সময় উপভোগ করবে, কিন্তু তা তোমার জন্য খুব তিক্ত পরিণতি ডেকে আনবে। তোমাকে আমরণ তার যন্ত্রনা সইতে হবে। আল্লাহ আমাদের হেফাযত করুক।
আবু বকর আল-ওররাক রহ. বলেন, যখন মানুষের উপর প্রবৃত্তি প্রাধান্য বিস্তার করে, তখন তার অন্তর আচ্ছন্ন হয়। আর যখন অন্তর আচ্ছন্ন হয়, তখন তার আত্মা সংকীর্ণ ও ব্যাধিগ্রস্ত হয়। আর যখন আত্মা ব্যাধিগ্রস্ত হয়, তার চরিত্র খারাপ হয়। আর যখন চরিত্র খারাপ হয়, তখন সমগ্র মাখলুক তাকে খারাপ জানবে। আর যখন মানুষ তাকে খারাপ জানবে তখন সেও মানুষকে খারাপ জানবে। তারপর যখন মানুষ বুড়ো হয় এবং শাইখের বয়সে উপনীত হয়, তখন সে তার প্রবৃত্তির অনুসরণ করার পরিণতি জানতে পারবে। সে তখন বুঝতে পারবে তার অতীত কত মূল্যবান ছিল। কোন এক কবি বলেন,
مَآرِبُ كَانَتْ فِي الشَّبَابِ لَأهْلِهَا
عِذَابُ فَصَارَتْ فِي المَشِيبِ عَذَاباً
অর্থাৎ, যখন একজন মানুষ জোয়ান ছিল, তখন তার নিকট যৌন চাহিদা ও মানবিক চাহিদাগুলো খুব মিষ্টি ও মধুর ছিল এবং অতীব সুন্দর ছিল। কিন্তু যখন সে যৌবনকে পাড়ি দিয়ে, বার্ধক্যে পৌঁছল, তখন তা তিক্ততা ও অশান্তিতে রূপ নিলো।
🔹
মনে রাখতে হবে নফসের বিরোধিতা করা অত্যন্ত কঠিন কাজ, আত্মার জন্য তা অতি কষ্টদায়ক এবং শরীরের উপর অনেক চাপ। কিন্তু এর পরিণতি অত্যন্ত ভালো এবং ফলাফল খুবই মধুর। নফসের বিরোধিতা করার ফলাফল লাভ হতে একমাত্র তারাই বঞ্চিত হয়, যাদের সাহস দুর্বল ও মানসিকতা কুলসিত। আবুল আতাহিয়া রহ. বলেন,

“সবচেয়ে বড় যুদ্ধ হল নফসের সাথে যুদ্ধ করা। আর তাকওয়া ছাড়া একজন মানুষকে আর কিছুই সম্মান দিতে পারে না”।
🔹
অপর একজন কবি বলেন,
“আমি যুগের মুসিবতের উপর ধৈর্যধারণ করি, ফলে তা আমাকে পৃষ্ট পদর্শন করে। আর আমি আমার আত্মার উপর ধৈর্য ধারণ করাকে চাপিয়ে দেই, ফলে তার কখনো বিচ্যুতি ঘটেনি। আর হে যুবক তুমি মনে রাখবে, নফসের বৈশিষ্ট্য হল, তুমি তাকে যেখানে লাগাবে সে সেখানেই ব্যবহৃত হবে। যখন তুমি তাকে প্রলোভন বা যোগান দিবে তখন সে শক্তিশালী হবে, অন্যথায় সে নিস্তেজ হয়ে থাকবে”।
প্রবৃত্তির অনুসরণ না করার বড় আলামত হল, দুনিয়ার জীবনের চাকচিক্য ও সৌন্দর্য হতে বিরত থাকা। মালেক ইব্ন দীনার রহ. বলেন, যে ব্যক্তি দুনিয়ার জীবনের সৌন্দর্য ও ধোঁকা হতে দূরে থাকতে পারবে প্রকৃত পক্ষে সেই তার নফসের উপর বড় বিজয়ী বলে বিবেচিত হবে।
প্রবৃত্তির অনুসরণ করা শুধু মূর্খ-জাহেল বা বাচ্চাদের বৈশিষ্ট্য নয় যা তাদের পথহারা করে বরং প্রবৃত্তির অনুসরণ সব ধরনের মানুষের বৈশিষ্ট্য। এমনকি আলেম-ওলামা, জ্ঞানী, বুদ্ধিজীবী ও পরামর্শক সব ধরনের লোকের অন্তরে প্রবৃত্তি বা খারাপ আত্মা বিদ্যমান থাকে। নারী-পুরুষ, ছোট-বড়, আবাল-বৃদ্ধা কেউ নফস বা প্রবৃত্তির চাহিদা হতে নিরাপদ নয়।
কোন এক জ্ঞানী বলেছিল, একজন অভিজ্ঞ, বুদ্ধিজীবী ও জ্ঞানী সেও অপরের থেকে পরামর্শ গ্রহণ করতে বাধ্য যাতে সে তার মতামতকে তার নফসের প্রভাব থেকে মুক্ত করতে পারে।
সুতরাং, কেউ এ কথা বলতে পারবে না যে, প্রবৃত্তির অনুসরণ হতে যে নিষেধ করা হয়েছে, আমি তার আওতার বাহিরে। কারণ, আমিতো প্রবৃত্তির অনুসরণ করি না। মনসুর আল-ফকীহ রহ. বলেন,
إنَِّ المَرَائِيَ لَا تُرِيكَ خُدُوشَ وَجْهِكَ فِي صَدَاهَا
وَكَذَاكَ نَفْسُكَ لَا تُرِيكَ عُيُوبَ نَفْسِكَ فِي هَوَاهَا
তোমার চেহারায় যে সব দাগ রয়েছে তা তুমি প্রত্যক্ষ করতে পারবে না। [বরং তোমার চেহারার দাগগুলো অপরের চোখে প্রদর্শিত হবে।] অনুরূপভাবে তুমি তোমার নফসের দোষ-ত্রুটিগুলো কখনোই দেখতে পারবে না। [অপরের নিকট তা অবশ্যই ধরা পড়বে।]
অনেক সময় দেখা যায় আমরা যাদের সবচেয়ে জ্ঞানী, বুদ্ধিমান ও দ্বীনদার বলে বিবেচনা করি সেও তার নফসের ধোঁকায় পড়ে এবং প্রবৃত্তির অনুসরণ হতে বিরত থাকতে পারে না।
আমরা আল্লাহ রাব্বূল আলামীনের দরবারে কামনা করি আল্লাহ রাব্বূল আলামীন যেন আমাদের প্রবৃত্তির অনুসরণের উপকরণ থেকে রক্ষা করে, আর আমাদের থেকে গোমরাহিকে দূর করে এবং আমাদের যেন তিনি ভালো ও সৎ কাজ করার তাওফিক দান করে।

Comments

Popular posts from this blog

Difficult time | কঠিন সময়

১৬ ডিসেম্বর ২০২২, ৫১ তম বিজয় দিবস

২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস